লালমাই,কুমিল্লা | | বঙ্গাব্দ

লাকসামের হিরু-হুমায়ুন গুমের এক যুগেও মেলেনি কোনো সন্ধান

author
Reporter

প্রকাশিত : Oct 12, 2025 ইং
হিরু ও হুমায়ুন - ফাইল ছবি ছবির ক্যাপশন: হিরু ও হুমায়ুন - ফাইল ছবি
ad728
 আলোকিত লালমাই অনলাইন ডেস্ক।।

প্রায় ১২ বছর আগে র‌্যাবের হাতে আটক হয়ে কুমিল্লা থেকে ‘নিখোঁজ’ হন লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম হিরু। এ সময় তার সাথে ছিলেন লাকসাম পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবীর পারভেজ। এক যুগ পরেও ওই দুই নেতার কোনো সন্ধান মেলেনি। স্বজনরা তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কথিত আয়না ঘর থেকে ‘গুম’ একাধিক ব্যক্তি ফিরে এসেছেন। এ খবরে নতুন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে খোঁজখবর নিচ্ছেন দুই পরিবারের স্বজনরাও। হিরু ও পারভেজ বেঁচে আছেন কি না মরে গেছেন এই সংবাদও দুই পরিবারের কারো কাছে নেই। অপেক্ষায় আছেন তারা ফিরে আসবেন।

মামলার অভিযোগ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে কুমিল্লার হরিশ্চর এলাকা থেকে র‌্যাব সদস্যরা ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স থেকে সাবেক এমপি হিরু, বিএনপির নেতা কবীর ও পৌর বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যায়। পরে র‌্যাব জসিমকে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় অন্য একটি মাইক্রোবাসে তুলে দেয়। কিন্তু তাদের থানায় হাজির করেনি র‌্যাব। এর পর থেকে তারা ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন।

দুইজনকে তুলে নেয়ার ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে ২০১৪ সালের ১৮ মে হুমায়ূন কবীর পারভেজের বাবা রংগু মিয়া কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলায় র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত প্রধান কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাহেদ রাজী, ডিএডি শাহজাহান আলী, এসআই সুলতান আহমেদ ও অসিত কুমারকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ৩১ আগস্ট মামলার বাদি রংগু মিয়া মারা যান। এতে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর পারভেজের ছোট ভাই গোলাম ফারুককে এ মামলার বাদি করা হয়। ২০১৫ সালে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মদ ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। এতে র‌্যাব কর্তৃক দুইজনকে ‘অপহরণের বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি’ বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে দুই ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ‘আত্মগোপনে’ থাকতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়।

সাইফুল ইসলাম হিরুর একমাত্র ছেলে রাফসানুল ইসলাম বলেন, বাবার খোঁজ চেয়ে অনেকের দ্বারস্থ হয়েছি। লাকসাম থানায় মামলা নেয়নি। পরে কোনো উপায় না পেয়ে ‘বাবা হারিয়ে গেছে’ এই মর্মে একটি জিডি করি। সেখান থেকে আমরা যাই র‌্যাব-১১-এর নারায়ণগঞ্জ অফিসে। র‌্যাব সে দিন অভিযান চালালেও আমার বাবাকে আটক করেনি বলে জানানো হয়। সেই থেকে যেখানেই বাবার খোঁজ আছে শুনেছি, সেখানেই ছুটে গেছি। এখনো বাবাকে খুঁজছি। আমরা ডিজিএফআইর সাথে দেখা করেছি, তারা প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য-প্রমাণ চেয়েছে, আমরা সব দিয়েছি। আশা করি বাবাকে ফিরে পাব।

নিখোঁজ হুমায়ূন কবীর পারভেজের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার বলেন, আমার স্বামীর কী অপরাধ ছিল? বিএনপি করা কি অপরাধ? আমরা প্রিয় মানুষটিকে ফিরে পেতে চাই।

মামলার আইনজীবী বদিউল আলম সুজন বলেন, পুলিশের তদন্তের পর সিআইডি সাড়ে ৫ বছরে বহুবার আদালত থেকে সময় নিয়ে একটি মনগড়া ও মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। পরে বাদির নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলা পিবিআইতে স্থানান্তর করে।

মামলার বাদি গোলাম ফারুক বলেন, সিআইডি মনগড়া প্রতিবেদন দিয়েছিল, পিবিআইও মামলার রহস্য বের করতে পারেনি। ফ্যাসিবাদ পতনের পর আমরা গুম কমিশনে অভিযোগ এবং ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি।

গুম হওয়া লাকসামের হিরু-পারভেজের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের লাকসাম সার্কেলের এএসপি রাজু আহমেদ জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। আমার আগের তদন্ত কর্মকর্তা মামলার বিষয়ে যা করেছেন তাই আছে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Reporter

কমেন্ট বক্স
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আলোকিত লালমাই ডট কম
সকল কারিগরী সহযোগিতায় A2SYS