শাহাবউদ্দিন সজিব॥
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা চোর-ডাকাতদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। রাত গভীর হতেই বাড়তে থাকে তাদের তৎপরতা। এতে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে সড়কের ঝোপঝাড় পরিষ্কার ও টহল পুলিশের দাবি করেছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি রাতে প্রতিটি সড়কে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা চেয়েছেন তারা।
তারা জানান, প্রায় প্রতিটি রাত উপজেলার কোনো না কোনো গ্রামে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। কেউ প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই এসব চিত্র ভেসে উঠছে। এছাড়াও কুমিল্লা- নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক ও বাগমারা- বাঙ্গড্ডা সড়কে রাত-দুপুরে গাড়ি আটকিয়ে চালক ও যাত্রীদের ওপর আক্রমণ করে তাদের সর্বত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছে ডাকাত দল।
এই নিয়ে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। ভুক্তভোগীরা মনে করে সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্ট্রিট লাইট স্থাপন, নিরাপত্তা টহল জোরদার ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে চুরি-ডাকাতি ও ছিনতায়ের মতো ঘটনা রোধ করা।
এ বিষয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগ না থাকায় বিভিন্ন সড়কের দু’ধারের ঝোপঝাড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে এগিয়ে আসছে বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এর মধ্যে গত (৭ অক্টোবর) কুমিল্লা-বাঙ্গড্ডা সড়কের ঝুকিপূর্ণ এলাকা ভূলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের কলমিয়া ঈদগাহ সংলগ্ন সড়কের দু'পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার অভিযান পরিচালনা করেন সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠন কলমিয়া হাজী সামছুল হক ফাউন্ডেশন। কুমিল্লা-বাঙ্গড্ডা সড়কের ঝুকিপূর্ণ এলাকা ভূলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের কলমিয়া ঈদগাহ সংলগ্ন সড়কের দু'পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করেছে সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠন কলমিয়া হাজী সামছুল হক ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফের নির্দেশনায় তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সড়কের দু'পাশের ঝোপঝাড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি দরকার বলে তারা জানান।
সড়কের ঝোপঝাড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দৃশ্য দেখে তাদের প্রশংসা করেন লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা এবং লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এই পথে চলাচলকারী যানবাহন চালক ও যাত্রীরা। একপর্যায়ে রাস্তার দু'পাশের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন ইউএনও হিমাদ্রী খীসা। এ-সময় তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের কাজের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।
উদ্যোক্তা মোশাররফ বলেন, ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে নিজ উদ্যোগে সড়কের দু'পাশে এ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করেছি। ঝোপঝাড়ের কারণে সড়কের উভয়পাশে কিছু দেখা যায় না। সড়কের ঝোপঝাড় পরিস্কার হলে অপরাধের পরিবেশ থাকবে না।
এসব বিষয় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও হিমাদ্রী খীসার কাছে জানতে চাইলে তিনি আলোকিত লালমাইকে বলেন, উপজেলা আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মিটিংয়ে এলাকায় ও সড়কগুলোতে প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধির বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে বলেছি তারা যেন সড়কগুলোতে লাইটিং ব্যবস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি সবখানে এই লাইটিং ব্যবস্থা স্থাপন করেন।
তিনি আরো বলেন, সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধির জন্য যতগুলো প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন, তিনি সবখানে ডাকাতি প্রতিরোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন।
এ বিষয়ে লালমাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম আলোকিত লালমাইকে বলেন, উপজেলায় চুরি- ডাকাতির হার বৃদ্ধি পেয়েছো। আমরা এসব রোধ করার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশি টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়েছি। পাশাপাশি এলাকার মানুষ ও সুধীজনদের নিয়ে সর্তক বার্তা প্রেরণ করছি।